বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৪ অপরাহ্ন

News Headline :
মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শ্যামনগরে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে সড়কে ভ্যান চালকের মৃত্যু রাজশাহীর মোহনপুরে মদ পানে ৩ জনের মৃত্যু, গ্রেফতার ২ রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

আড়াই বছর ধরে বিনামূল্যে দুপুরের খাবার পাচ্ছেন দরিদ্ররা

Reading Time: 2 minutes

শাহরিয়ার মিল্টন ,শেরপুর :

মানুষ মানুষের জন্য। অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দেওয়া, অসহায়কে সহায়তা করা, তাদের মুখে হাসি ফোটানোই সবচেয়ে বড় সার্থকতা। ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন দ্রুত বাড়তে শুরু করে, তখন বিধিনিষেধের কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন। কাজকর্ম না থাকায় এক বেলা খাবার জোটানো অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে। এমন সময় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ান শেরপুরের কয়েকজন তরুণ পেশাজীবী বন্ধু। ২০২০ সালের আগস্ট থেকে তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ জন দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে দুপুরের খাবার দিচ্ছেন, যা এখনো চলছে।
সংগঠনটির নাম নৃ ফাউন্ডেশন। ‘অনাহারির জন্য আহার ও অসহায়ের জন্য সহায়’  স্লোগানকে সামনে রেখে শেরপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি আরও কিছু কাজ করেছে। বিভিন্ন সময় শতাধিক পরিবারের কর্মসংস্থানের জন্য সেলাই মেশিন, রিকশা, ভ্যান, ছাগল, গরু বিতরণ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গরিব শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে তারা। এছাড়া দরিদ্র পরিবারকে ঘর করে দেওয়া এবং শীতার্ত মানুষকে কম্বল দেওয়ার মতো কাজও তারা নিয়মিত করে যাচ্ছে। মূলত সংগঠনের সদস্যরা চাঁদা দিয়ে এসব কাজ করেন। তাঁদের সহায়তা করেন স্থানীয় বিত্তবান লোকজন।
জানা গেছে, নৃ ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তারা প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ অনাহারীর আহারে অনুদান দিচ্ছেন। একই সঙ্গে নৃ ফাউন্ডেশনের ভালো কাজে জড়িত থাকতে এলাকার অনেকেই তাদের অনুদান দিচ্ছেন। অনেকে তাদের ফেসবুক পেইজ ফলো করে স্বপ্রণোদিত হয়ে অনুদান দিতে আগ্রহী হচ্ছেন। দেশের বাইরে থেকেও তাদের অনেক শুভাকাঙ্খী সহায়তা করছেন অনাহারীর খাবার যোগাতে। আবার কেউবা নিজের, পরিবারের বা প্রিয়জনের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, আপনজনের মৃত্যুবার্ষিকী কিংবা অসুস্থতা উপলক্ষেও অনাহারীর আহারে আয়োজন করেন বিশেষ খাবারের।
নৃ ফাউন্ডেশনের সভাপতি তনুজ ভৌমিক বলেন, শুভাকাঙ্খীদের সক্রিয় সহযোগিতা, অনুদান ও দিকনির্দেশনা আছে বলেই তারা এই কাজগুলো করতে পারছেন। নৃ ফাউন্ডেশনের সদস্য ২১ জন। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন। প্রতিদিন বেলা দুইটার দিকে শেরপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে তাঁরা ৭০-৮০ জনকে দুপুরের খাবার দেন।
শহরের চকপাঠক এলাকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফকির মামুদ (৬৪) বলেন, ‘ছোটবেলা থাইক্যা অন্ধ। কোনো কাজ করবার পারি না। ভিক্ষা কইরা দিন চালাই। আড়াই বছর ধইরা এই সংগঠনের লোকজন আমগোরে দুপুরের এক বেলা খাবার দিতাছে। আমি খুব খুশি।’শহরের নবীনগর পানাইতাপাড়া এলাকার হাজেরা বেগম (৬২) বলেন, ‘অনেক আগে স্বামী মইরা গেছে। ছেলেমেয়েরা দিনমজুর। নিজেগোর খাবারই জুটাইতে পারে না। তাই আমি ভিক্ষা কইরা খাই। কিন্তু এই সংগঠন আড়াই বছর ধইরা আমারে দুপুরের খাবার দিতাছে। তাগোরে দোয়া করি।’
শেরপুর পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া বলেন, নৃ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই স্বেচ্ছাসেবীরা সত্যিকারের মানবপ্রেমী।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com